রবিবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৭:৫২ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম
কবিতা : জুতোবদন । কবি : মো: জাকির হোসেন অপু কবিতা : বারবনিতা লেন । কবি : মো: জাকির হোসেন অপু অবশেষে জামালপুর থেকে ছাড়বে ‘বিজয় এক্সপ্রেস’ একনজরে আওয়ামী লীগের ২৯৮ প্রার্থী স্বতন্ত্র নির্বাচন করছেন এমপি মুরাদ! নৌকার টিকিট পেলেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব আবুল কালাম দৈনিক সত্যের সন্ধানের প্রতিদিন পত্রিকার কর্মকর্তা—কর্মচারীদের জন্য বাংলালিংক কর্পোরেট সিমের চুক্তি সম্পন্ন জামালপুর প্রেসক্লাবের হেভিওয়েট ৬ সদস্য দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ৭ জানুয়ারি ১০ নভেম্বর মরহুম সিরাজুল ইসলাম খান (ছোট মাষ্টার) স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট — ২০২৩ সিজন—২ এর ফাইনাল খেলা
আজ ৯/১১ কুড়ি বছর আগের

আজ ৯/১১ কুড়ি বছর আগের

হাকিকুল ইসলাম খোকন, যুক্তরাষ্ট্র সিনিয়র প্রতিনিধিঃ কুড়ি বছর আগে ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর (৯/১১) আমেরিকায় চারটি যাত্রীবাহী জেট বিমান ছিনতাই করে আঘাত হানা হয় নিউইয়র্কের দুটি আকাশচুম্বী ভবনে। প্রথম বিমানটি আঘাত হানে নর্থ টাওয়ারে আমেরিকার পূর্বাঞ্চলীয় সময় সকাল ৮টা ৪৬ মিনিটে। দ্বিতীয় বিমানটি সাউথ টাওয়ারে বিধ্বস্ত হয় এর অল্পক্ষণ পর, সকাল ৯টা ৩ মিনিটে। সঙ্গে সঙ্গে দুটি ভবনেই আগুন ধরে যায়। ভবন দুটির উপরতলায় মানুষজন আটকা পড়ে। শহরের আকাশে ছড়িয়ে পড়ে বিশাল ধোঁয়ার কুণ্ডলী। দুটি টাওয়ার ভবনই ছিল ১১০ তলা। মাত্র দুই ঘণ্টার মধ্যে দুটি ভবনই বিশাল ধুলার ঝড় তুলে মাটিতে ভেঙে গুঁড়িয়ে পড়ে আর তৃতীয় বিমানটি রাজধানী ওয়াশিংটনের উপকণ্ঠে প্রতিরক্ষা বিভাগের বিশাল সদর দপ্তর পেন্টাগনের পশ্চিম অংশে আঘাত হানে স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৩৭ মিনিটে। সকাল ১০টা ৩ মিনিটে চতুর্থ বিমানটি আছড়ে পড়ে পেনসিলভেনিয়ার এক মাঠে। ছিনতাই হওয়া চতুর্থ বিমানের যাত্রীরা ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর পর সেটি পেনসিলভেনিয়ায় বিধ্বস্ত হলে ওয়াশিংটন ডিসিতে ক্যাপিটল ভবনে হামলার পরিকল্পনা নস্যাৎ হয়।

৯/১১ হামলায় সব মিলিয়ে মারা গিয়েছিল ২,৯৭৭ জন। এই হিসাবের মধ্যে ১৯ জন ছিনতাইকারী অন্তর্ভুক্ত নেই। নিহতদের বেশিরভাগই ছিল নিউইয়র্কের লোক। সর্বকনিষ্ঠ নিহতের বয়স ছিল দু’বছর। নাম ক্রিস্টিন লি হ্যানসন। তার বাবা মায়ের সাথে সে একটি বিমানের যাত্রী ছিল। নিহত সর্ব জ্যেষ্ঠ ব্যক্তির নাম রবার্ট নর্টন। তার বয়স ছিল ৮২। তিনি ছিলেন অন্য আরেকটি বিমানে এবং তার স্ত্রী জ্যাকুলিনের সাথে তিনি একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। প্রথম বিমানটি যখন ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে আঘাত করে, তখন ভবনের ভেতরে আনুমানিক ১৭ হাজার ৪০০ জন লোক ছিল। নর্থ টাওয়ারের যে অংশে বিমান আঘাত করে, তার ওপরের কোন তলার মানুষই প্রাণে বাঁচেনি। তবে সাউথ টাওয়ারে যেখানে বিমান আঘাত করে, তার ওপরের অংশ থেকে ১৮ জন প্রাণ নিয়ে বেরুতে পেরেছিল। হতাহতের মধ্যে ৭৭টি ভিন্ন ভিন্ন দেশের মানুষ ছিলেন। নিউইয়র্ক শহরে যারা প্রথম ঘটনাস্থলে জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় ছুটে যান, তাদের মধ্যে ৪৪১ জনের মৃত্যু হয়।

৯/১১ হামলায় হাজার হাজার মানুষ আহত হন, যারা পরে নানাধরনের অসুস্থতার শিকার হন। যেমন দমকলকর্মীদের অনেকে বিষাক্ত বর্জ্যের মধ্যে কাজ করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। নিউইয়র্কে হামলার স্থান, যেখানে টুইন টাওয়ার বিধ্বস্ত হয়েছিল, সেই ‘গ্রাউন্ড জিরো’র ধ্বংসস্তুপ পরিষ্কার করতে সময় লেগেছিল আট মাসেরও বেশি। ওই স্থানে এখন তৈরি হয়েছে একটি যাদুঘর এবং একটি স্মৃতিসৌধ। ভবনগুলো আবার নির্মিত হয়েছে, তবে ভিন্ন নকশায়। সেখানে মধ্যমণি হিসাবে নির্মিত হয়েছে ‘ফ্রিডম টাওয়ার’, যা উচ্চতায় আগের নর্থ টাওয়ারের চেয়েও বেশি। নর্থ টাওয়ারের উচ্চতা ছিল ১,৩৬৮ ফুট আর নতুন ফ্রিডম টাওয়ার ১,৭৭৬ ফুট উঁচু। পেন্টাগন পুনর্নিমাণে সময় লেগেছিল এক বছরের কিছু কম। ২০০২ সালের আগাস্টের মধ্যে পেন্টাগনের কর্মচারীরা আবার তাদের কর্মস্থলে ফিরে যান।

৯/১১ ঘটনার পর বিশ্বে ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’র ঘোষণা দেয় আমেরিকা ও তার মিত্ররা। ওই হামলার এক মাসেরও কম সময় পর তৎকালীন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ বুশ আফগানিস্তান আক্রমণ করেন আল-কায়দাকে নিশ্চিহ্ন করতে এবং ওসামা বিন লাদেনকে খুঁজে বের করতে। আমেরিকার নেতৃত্বাধীন এই অভিযানে যোগ দেয় আন্তর্জাতিক মিত্র জোট। যুদ্ধ শুরুর কয়েক বছর পর ২০১১ সালে মার্কিন সৈন্যরা অবশেষে ওসামা বিন লাদেনকে খুঁজে পায় প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানে এবং তাকে হত্যা করা হয়। হামলার অভিযুক্ত পরিকল্পনাকারী খালিদ শেখ মোহাম্মদকে গ্রেফতার করা হয় পাকিস্তানে ২০০৩ সালে। এরপর থেকে তাকে গুয়ান্তানামো বে’র বন্দীশিবিরে আমেরিকার তত্ত্বাবধানে আটক করে রাখা হয়। এখনও তিনি বিচারের অপেক্ষায় আছেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

Leave a Reply




© এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY SheraWeb.Com