নিজস্ব প্রতিবেদক ।।
জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় ব্যাপক সম্ভাবনা থাকায় পতিত জমিতে পানিফল চাষ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছে। কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় কৃষকরা পানিফল চাষে আগ্রহী হয়েছেন। পানিতে চাষ করা সুস্বাদু ফলটি জেলার চাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন বাজারেও চলে যাচ্ছে।
এই ফলের বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছে ট্রাপা নাটানস আর ইংরেজিতে বলা হয় ওয়াটার চেস্টনাট। পানিতে চাষ হয় বলে স্থানীয়ভাবে পানিফল বা সিঙ্গারার মত দেখতে হওয়ায় সিঙ্গারাও বলা হয়। এতে প্রচুর উপকারিতা রয়েছে। এটি বলকারক এবং যকৃতের প্রদাহনাশক ও উদরাময় রোগ নিরাময়ক। যৌনশক্তিবর্ধক ও ঋতুর আধিক্যজনিত সমস্যায় বেশ উপকারী। এছাড়া পিত্তজনিত রোগনাশক, রক্ত দাস্ত বন্ধকারক, প্রস্রাববর্ধক, শোথনাশক ও রুচিবর্ধক। দীর্ঘকাল থেকেই এটি ওষুধি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এর কোনই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।
দেওয়ানগঞ্জে পরিত্যক্ত খাল, বিল, পুকুর, ডোবায় পানি ফলের চাষ করা হয়। প্রতিবছর বোরো ধান কাটার পর খাল, বিল, ডোবাতে জমে থাকা পানিতে প্রথমে এই ফলের লতা রোপণ করা হয়। ৩ থেকে সাড়ে ৩ মাসের মধ্যে ফল আসে গাছে।
ডালবাড়ীর পানিফলচাষী আলতাফ হোসেন জানান, এই ফসলের সার র্কীটনাশকের তেমন প্রয়োজন হয় না। প্রতিবিঘা জমিতে খরচ হয় ৩-৪ হাজার টাকা। ফল বিক্রি করা হয় ২৫-৩০ হাজার টাকা।
গুজিমারি এলাকার পানিফলচাষী আবুল হোসেন জানান, একবিঘা জমিতে পানিফল চাষ করে ব্যয় হয়েছে ৫ হাজার টাকা। বিঘা প্রতি ৬০ মণ পানি ফল হয়েছে। মণপ্রতি ৮০০ টাকা বিক্রি করে 48হাজার টাকার পানিফল বিক্রি করেছেন তিনি।
দেওয়ানগঞ্জে প্রায় দুইশতাধিক কৃষক প্রায় ১০০ হেক্টর জমিতে পানিফল চাষ করেছেন। ২৬ অক্টোবর সকালে দেওয়ানগঞ্জ রেলস্টেশনে পানিফল প্রতি কেজি ৭০-৮০ টাকা বিক্রি করতে দেখা গেছে। আবার সিদ্ধ করা পানিফল ৮০ টাকায় বিক্রি করছে খুচরা ব্যবসায়ীরা।
এবার বন্যার কারণে পানিফল চাষ দেরিতে হওয়ায় অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ফলন কম। তবে দাম বেশি পাওয়ায় কৃষকদের মুখে হাসি দেখা দিয়েছে।
দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা পরেশ চন্দ্র দাস জানান, পতিত জমিতে পানিফল চাষ করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। এই ফলের পুষ্টিমানও বেশি।