বুধবার, ০৭ Jun ২০২৩, ০৬:৩৩ অপরাহ্ন
দেওয়ানগঞ্জ প্রতিনিধি ॥
জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় বর্ষা মৌসুম শুরু হতে না হতেই যমুনার তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে উপজেলার চুকাইবাড়ী ইউনিয়নের হলকার চর, হাবরাবাড়ী ও টিনের চর এলাকার প্রায় ১ হাজার ৫শ পরিবার ও সরকারের দেওয়া ভূমিহীন ও গৃহহীনদের দুটি গুচ্ছগ্রাম। গত দুই বছরে ওই এলাকার প্রায় ৪ শতাধিক বসত-বাড়ি ও ফসলী জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। হতাশায় ভুগছে দুটি গুচ্ছগ্রামসহ ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রায় ১ হাজার ৫শ পরিবার।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার চুকাইবাড়ী ইউনিয়নের ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের হলকার চর, হাবরাবাড়ী ও টিনের চর এলাকায় ১ হাজার ৫শ পরিবার বসবাস করে আসছে। ২০১০ ও ২০১৬ সালে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দকৃত অর্থায়নে সরকারের দেওয়া হাবড়াবাড়ী গুচ্ছগ্রামে ৬০টি পরিবার ও চর হরিণধরায় গুচ্ছগ্রামে ৭০টি পরিবার বসবাস করে আসছে। অসহায় পরিবারগুলো গত কয়েক বছরে গাছপালা লাগিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করে আসছে। একসময় গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারগুলো তাদের নিজ জায়গা জমিতে রাজার হালে জীবন যাপন করতো। বিগত কয়েক বছরে যমুনার করাল গ্রাসে তাদের ভিটেমাটি, আবাদি জমি সবকিছু হারিয়ে সরকারের বরাদ্দকৃত গুচ্ছগ্রামে দিনাতিপাত করছে। বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই যমুনা নদীর তীব্র ভাঙনে গুচ্ছগ্রামের ১শ ৩০টি পরিবার হুমকির মুখে পড়েছে। চলমান নদীভাঙন অব্যাহত থাকলে কিছুদিনের মধ্যেই এই গুচ্ছগ্রাম যমুনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।
এলাকাবাসী জানান, ইতিপূর্বে গুচ্ছগ্রাম থেকে যমুনা নদী ছিল প্রায় ১ কিলোমিটার দুরে চলতি বছর বর্ষা শুরু হতে না হতেই যমুনার তীব্র ভাঙনে নদী কাছে এসেছে।
ওই গুচ্ছগ্রামের বরকত আলী (৪৫) হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, ভিটেমাটি সব কিছু হারিয়ে সরকারের দেওয়া ছোট্ট ঘরে পরিবার পরিজন নিয়ে আশ্রয় নিয়েছি। নদী যেভাবে ভাঙছে কোন সময় যমুনা নদীতে বিলীন হয়ে যাবে সরকারের দেওয়া গুচ্ছগ্রাম।
চুকাইবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদুজ্জামান সেলিম খান জানান, গত কয়েক দিনের তীব্র নদী ভাঙনে কিছু পরিবারের ঘর-বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে, দুটি গুচ্ছগ্রামের ১শ ৩০টি পরিবারের বসত-বাড়ি হুমকির মুখে রয়েছে। পানি উন্নয়ন মন্ত্রণালয় দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে নদীগর্ভে বিলীন হবে সরকারের দেওয়া গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারদের বসতঘর।
যমুনা নদীর ভাঙনের সংবাদ পেয়ে গুচ্ছগ্রাম পরিদর্শন করেছেন দেওয়ানগঞ্জ সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ আসাদুজ্জামান। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ এনামুল হাসান, চুকাইবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান রাসেদুজ্জামান সেলিম খান ও উপজেলা দারিদ্র্য বিমোচন কর্মকর্তা আবুল হোসেন।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসাদুজ্জামান জানান, যমুনার তীব্র ভাঙন পরির্দশন করা হয়েছে। বিষয়টি লিখিত এবং মৌখিকভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি, তারা যেন ঘরগুলো স্থানান্তরের ব্যবস্থা গ্রহণ করে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের মতামতের ভিত্তিতে ঘরগুলো অন্য এলাকায় সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.