রবিবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৭:৪০ পূর্বাহ্ন
নকলা (শেরপুর) প্রতিনিধি: মাছ বাঙ্গালির কৃষ্টি ও সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। বাংলাদেশের মৎস্য সম্পদের একটি বিরাট অংশ জুড়ে রয়েছে দেশীয় প্রজাতির ছোট মাছ। দেশে মিঠাপানির ২৬০টি প্রজাতির মাছের মধ্যে ১৪৩ প্রজাতির ছোট মাছ রয়েছে।
প্রাচীনকাল থেকে দেশীয় প্রজাতির মাছ আমাদের সহজলভ্য পুষ্টির অন্যতম উৎস হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। এর মধ্যে মলা, ঢেলা, পুঁটি, বাইম, টেংরা, খলিশা, পাবদা, শিং, মাগুর, কেচকি, চান্দা ইত্যাদি অন্যতম। এসব মাছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, লৌহ ও আয়োডিনের মতো প্রয়োজনীয় খনিজ পদার্থ রয়েছে। এসব উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে তোলে এবং রক্তশূন্যতা, গলগন্ড, অন্ধত্ব প্রভৃতি রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
বিভিন্ন কারণে দেশি মাছ দিন দিন বিলুপ্ত হচ্ছে।বিলুপ্ত হওয়ার উল্লেখযোগ্য কারন গুলোর মধ্যে নদী, বিল, খাল ভরাট হয়ে যাওয়া একটি। আর ভরাট হওয়ার কারন গুলোর মধ্যে কচুরি পানা পচে নিচে জমে ভরাট হওয়া অন্যতম কারন। ফলে প্রাকৃতিক জলাশয়ে ছোট মাছের প্রাপ্যতা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে এবং দেশি প্রজাতির মাছ দিন দিন বিলুপ্ত হচ্ছে। ওটঈঘ (২০১৫) এর তথ্য মতে, দেশে বিলুপ্ত মাছের সংখ্যা প্রায় ৬৪টি।
এরই ধারাবাহিকতায় কচুরি পানা পচে বিল ভরাট হওয়া ও দেশীয় মাছ রক্ষায় শেরপুরের নকলা উপজেলার নয়াবাড়ি মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি ও সমাজ উন্নয়ন সংঘের সদস্যবৃন্দ, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দসহ স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরা মিলে দেশীয় মাছ রক্ষায় কুর্শাবিল থেকে স্বেচ্ছাশ্রমে কচুরিপানা পরিস্কারের কার্যক্রম শুরু করেছে। সেই লক্ষে ইতিমধ্যে প্রায় ২০ একর এলাকার কচুরি পানা পরিস্কার করা শেষ হয়েছে এবং এই কার্যক্রম পানা শেষ না হওয়া পর্যন্ত চলবে বলে তারা জানান।
উপজেলা মৎস্যজীবী লীগের আহবায়ক আনোয়ার হোসেন, নয়াবাড়ি মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি আবু বক্কর, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক নাজমুল ইসলামসহ অনেক সুশীল জনের দাবী মৎস্যজীবী পরিবারের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য উপজেলার জলামহাল গুলোর কচুরিপানা পরিস্কার করতে সরকারিভাবে যেন আর্থিক সহায়তা দেওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়। এতে করে একদিকে যেমন উপজেলার মৎস্যজীবী পরিবারের ভাগ্য পরিবর্তন ঘটবে অন্যদিকে দেশীয় মাছ বিলুপ্তি হতে রক্ষা পাবে।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.