মিজানুর রহমান, নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি: ভন্ড পীরের পাল্লায় পড়ে সহায়-সম্বল হারিয়ে অবশেষে হতাশায় গলায় ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে এমদাদুল হক (৪০) নামে দুই সন্তানের জনক। শনিবার (৩১ জুলাই) দিবাগত রাতের কোন এক সময় শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার ঘাকপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে রবিবার বেলা দেড়টার দিকে স্থানীয়রা এমদাদুলের লাশ পাশের বাড়ির পেছনে একটি গাছের ডালে রশিতে ঝুলতে দেখে। পরে খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন ও থানা পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ঘাকপাড়া গ্রামের মৃত হুরমুজ আলীর ছেলে এমদাদুল বেশ কিছুদিন আগে পার্শ্ববর্তী হালুয়াঘাট উপজেলার আবু হুরায়রা নামে এক ভন্ড পীরের অনুসারী হয়। ওই পীরের অনুসারী হওয়ার পর থেকে নানা প্রলোভনে পড়ে নিজের সামান্য জমিজমা বিক্রি করে একপর্যায়ে অর্থহীন হয়ে পড়ে সে। এরপর থেকেই হতাশাগ্রস্থ ছিল এমদাদুল। গত কয়েকদিন আগে ওই পীর তার দেওয়া একটি বিশেষ লাঠি ও লাল রঙের কাপড় (যা অনুসারীদের দেওয়া হয়) এমদাদুলের কাছ থেকে ফিরিয়ে নেয় কথিত পীল হুরায়রা। পীরের দেওয়া ওই লাঠি ও কাপড় ফেরত নেওয়ার পর এমদাদুল আরও মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে সে নিখোঁজ হয়। তখন থেকেই পরিবারের লোকজন এমদাদুলকে খোঁজাখুঁজি শুরু করে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ‘অনুসারী হওয়ার যোগ্য নয়’বলে এমদাদুলের কাছ থেকে লাঠি ও লাল কাপড় ফেরত নেওয়ার পর থেকেই সে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। তার পিতা হুরমুজ আলীও প্রায় ২৭-২৮ বছর আগে বিষপানে আত্মহত্যা করে।
নালিতাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বছির আহমেদ বাদল জানান, শনিবার দিবাগত রাতের যে কোনো সময় এমদাদুল হক গলায় ফাঁস দিয়েছে। হালুয়াঘাট উপজেলার এক পীর ধরেছিল সে। এরপর থেকেই সে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়। রোববার বিকেলে তার লাশ উদ্ধার করে সূরতহাল রিপোর্ট তৈরি শেষে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে। এব্যাপারে নালিতাবাড়ী থানায় একটি ইউডি মামলার প্রস্তুতি চলছে।