স.স.প্রতিদিন ডেস্ক ।।
ভাঙনের কবলে পড়েছে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত। বিশ্বের দীর্ঘতম এই সমুদ্রসৈকতের বিভিন্ন স্থানে ভাঙনের কারণে চরম ঝুঁকিতে রয়েছে কক্সবাজার শহর। সাগর যেন ক্রমেই ঢুকে পড়ছে পর্যটন শহর কক্সবাজারে দিকে। সাগরের উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়ে ঢেউয়ের সঙ্গে মিশে তার গর্ভে বিলীন হচ্ছে বালিয়াডীর বিশাল অংশ। সমুদ্রের এমন তাণ্ডবে শঙ্কিত স্থানীয় ও পরিবেশবাদীরা। পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, শহর রক্ষায় সব চেষ্টায় করা হচ্ছে। পরিকল্পনা করে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে মন্ত্রণালয়ে।
গ্রীষ্ম, বর্ষা কি শীত—সব ঋতুতেই ঢেউয়ের তোড়ে ভাঙছে সাগরের কূল। উপড়ে পড়ছে রক্ষাকবজ ঝাউবীথি। দিন যতে যাচ্ছে ততই শহরের দিকে ধেয়ে আসছে সমুদ্রের পানি। জিও ব্যাগ দিয়ে পর্যটন শহরকে কোনোভাবে রক্ষা করতে চেষ্টা করলেও সাগরের ঢেউয়ের ধাক্কায় বালিয়াডীর বিশাল অংশ এখন সমুদ্রগর্ভে।সাগরের এই আগ্রাসনে পর্যটন শহর তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা স্থানীয়দের। কক্সবাজারের রাজনীতিবিদ নজিবুল ইসলাম জানান, শহর যেকোনো সময় সমুদ্রের করাল গ্রাসে ভেসে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই সৈকত ও কক্সবাজার শহরকে রক্ষা করতে সরকারের যে পরিকল্পনা, তা কাজে লাগানো প্রয়োজন।
অন্যদিকে পরিবেশবাদীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সাগরের উচ্চতা বেড়েছে। এ কারণে আশির দশক থেকে সাগর তাণ্ডব শুরু করে। উপকূল ভাঙতে ভাঙতে ধেয়ে আসছে শহরের দিকে। এখনি শহর রক্ষা করতে পদক্ষেপ জরুরি। এনভায়রনমেন্ট পিউপল কক্সবাজারের প্রধান নির্বাহী রাশেদুল মজিদ জানান, এক দশক ধরে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত এবং বিভিন্ন এলাকায় ভাঙন চলছে। এভাবে চলতে থাকলে কক্সবাজার শহর চরম ঝুঁকিতে পড়বে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজারের নাজিরারটেক থেকে মেরিন ড্রাইভের ব্যালি হ্যাচারি পয়েন্ট পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার প্রতিরক্ষার পরিকল্পনা করা হয়েছে। যেখানে ৫ কিলোমিটার রাস্তায় ওয়াকওয়ে, সুড়ঙ্গ, রেস্টুরেন্টসহ পর্যটনবান্ধব সব আয়োজন। কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রবীর কুমার গোস্বামী জানান, “সমুদ্রসৈকতের যে প্রাকৃতিক অবস্থান, সেটাকে সুনিশ্চিত করেই প্রতিরক্ষাকাজ বাস্তবায়ন করা হবে। বালিয়াড়ির নিচে প্রতিরক্ষাকাজ বিদ্যমান থাকবে। ওপরে সব সময় বালি থাকবে আর সৈকতের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও বিদ্যমান থাকবে।”
প্রবীর কুমার আরো জানান, সাগর থেকে শহর রক্ষাকবজ পরিকল্পনা অনুমোদন হলে আগামী চার বছরের মধ্যে এক সুফল পাওয়া যাবে।