দৈনিক সত্যের সন্ধানে প্রতিদিন এর কষ্টসাধ্য পথচলায় আমরা চাই
পাঠক-বিজ্ঞাপনদাতাসহ সকল মহলের সর্বাত্মক সহযোগিতা
॥ মোঃ রাশেদুর রহমান রাসেল॥
বলাই বাহুল্য জামালপুর জেলা সংবাদপত্র জন্মদানের উর্বর ভূমি। আর এ কথা সংশ্লিষ্ট সকলেই অবগত। এ জেলা থেকে একে একে অনেকগুলো দৈনিকের জন্ম হলেও বেঁচে থাকা পত্রিকার সংখ্যা কিন্তু সত্যিই নগন্য। কাজীর গরু যেমন কিতাবে থাকে আমাদের এসব পত্রিকাগুলোও সঙ্গত কারণেই নামেই প্রকাশ্য। একথা বলতে আমি লিখতে বসিনি যে, তারা পত্রিকা বের করতে পারছে না কিন্তু আমি পারছি। বরং আমি একথা বলতে লিখতে বসেছি যে, যারা পত্রিকা বের করবে বলে পত্রিকার ডিক্লারেশন নিয়েছিল উপযুক্ত পৃষ্ঠপোষকতা, অনুকুল পরিবেশ আর প্রয়োজনীয় সবদিক থেকে বঞ্চিত হওয়ার কারণে তারা সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে উঠতে পারেনি। পারেনি এ ব্যর্থতা শুধু তাদের নয় জামালপুরবাসী হিসেবে আমাদের সকলের। কেননা তারা সমাজ সংস্কারের যে দুর্গম পথে আমাদের ভালবাসাকে পুঁজি করে এগিয়ে যেতে মনস্থির করে তাদের হাতের পাঁচ দেদার ঢেলে দিয়ে আমাদের চেতনাকে সমৃদ্ধ করতে পথে নেমেছিল আমরা তাদের সমর্থন করতে সংকোচ বোধ করেছি। জ্ঞানের পৃষ্ঠপোষকতা করতে আমরা কার্পণ্য করেছি। বাঁচিয়ে রাখতে পারিনি আমাদের সংবাদপত্র শিল্পের ব্যাপকতার শ্রেষ্ঠত্বকে। কিন্তু একথা না বললেই নয় যে দেশে জ্ঞানের মূল্যায়ন করা হয়না, সে দেশে জ্ঞানী জন্মায় না। জ্ঞানের কদর তো জ্ঞানীদেরই মানায়। তাই আমরা কি তবে দিনে দিনে জ্ঞানহীন জনপদে পরিণত হতে চলেছি। বোধকরি তাই। আমরা আজ পত্রিকার চেয়ে নিজেদের বাঁচাতেই বেশি ব্যস্ত। যেনতেন গোছের একটি পত্রিকার পরিচয়পত্র বাগিয়ে নিয়ে নিজেদের রুটি রুজির ব্যবস্থা করার হাতিয়ার হয়ে বেঁচে থাকার জন্যেই বোধকরি আমাদের বর্তমান। সে কারণে স্থানীয় পত্রিকার সংখ্যা দিনদিন হ্রাস পেতে চলেছে। সংবাদপত্রে নিরপেক্ষতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে বিবেচিত। কিন্তু সংশ্লিষ্ট সকলে যখন সংবাদপত্র থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় তখন সংবাদপত্রতো কোন পক্ষের হয়ে যাবেই। একথা অনেককে আফসোসের সাথে আমরা প্রায়ই বলতে শুনি ওটা বিএনপির, ওটা আওয়ামী লীগের, ওটা জাতীয় পার্টির, ওটা জামায়াত ইসলামের পত্রিকা। তবে জনগণের পত্রিকা কোনটা? আর আমরা বলি আমরাওতো নানা দলে আর মতে বিভক্তির মধ্যেই আছি। আমরাই তো আজও নীতিগত কারণেও ঐক্যবদ্ধ হতে পারিনি। জাতীয়ভাবেতো নয়ই কিন্তু স্থানীয়ভাবেও আজ আমরা সত্যিই বন্ধনহীন অনৈক্যের কারণে ছন্নছাড়া জীবনের আর স্বার্থের অধিকারী। আর এ কারণে প্রতিনিয়তই জনস্বার্থ পড়ে পড়ে মার খায়। আর আমরা আফসোস করে নিজেদের ঐক্যের দেউলিয়াপনার জানান দেই। একথা এতটাই সত্য যে যতদিন আমরা জনস্বার্থে আপোষহীন হতে না পারবো ততদিন আমরা স্বাধীনতার স্বাদ পাব না। ঐক্যবদ্ধ জাতিস্বত্তা গড়ে তুলতে না পারলে আমাদের স্বাধীনতা অর্থহীন হয়েই বেঁচে থাকবে। আমরা আমাদের স্বার্থকে সমুন্নত করতে চাইলে জন্ম দিতে হবে নিরপেক্ষ সংবাদপত্রের। আর নিরপেক্ষতায় আমাদের সকলের অবদান অনস্বীকার্য। তাই আসুন নিরপেক্ষ একটি দৈনিকের পৃষ্ঠপোষকতায় এগিয়ে এসে নিজের দায়মুক্তি ঘটাই। সত্যের সন্ধানে প্রতিদিন পত্রিকাটির পথচলায় পাশে দাঁড়াই। আমরা আপনাদের নিয়ে নিরপেক্ষভাবে এগিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.