সোমবার, ০৫ Jun ২০২৩, ০৭:৪৬ অপরাহ্ন
আব্দুল্লাহ্ আল-আমিন, নকলা,(শেরপুর) প্রতিনিধি: একঝাঁক তরুণ প্রায় সবাই শিক্ষার্থী। কেউ স্কুলে, কেউ কলেজে, কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে, কেউবা পড়াশোনার গণ্ডি পেরিয়ে চাকরিতে ঢুকেছেন।
পরনে টি-শার্ট। চোখেমুখে উচ্ছ্বাস। কখনো নিজেদের মধ্যে শলাপরামর্শ, কখনো ছড়িয়ে পড়ছেন মুমূর্ষু রোগীদের মুখে হাসি ফোঁটাতে বিভিন্ন ক্লিনিকে বা হাসপাতালে।
সবার একই উদ্দেশ্য রক্তদানের মাধ্যমে অসহায় মুমূর্ষু রোগীর মুখে হাসি ফোঁটিয়ে মানুষের দ্বার প্রান্তে গিয়ে সেবা করা। বলছি শেরপুরের নকলার অন্যতম স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ব্লাড ব্যাংক অফ নকলার কথা। ২০১৬ সালের ০৯ জুন থেকে যাত্রা শুরু এই সংগঠনটির। শুরুর দিকে কতিপয় বন্ধুরা সংঘবদ্ধ হলেও পরবর্তীকালে তাদের কার্যক্রম ছড়িয়ে পড়েছে পুরো জেলাব্যাপী। অলাভজনক ও অরাজনৈতিক এ সংগঠনের নানামুখী কার্যক্রম চলে সারা বছরই।
রক্তের প্রয়োজন হয়েছে কারও এমন তথ্য পাওয়ার পর থেকে সংগঠনের কর্মীদের মধ্যে রীতিমতো প্রতিযোগিতা লেগে যায়। রোগীর স্বজনদের কাছে কে কার আগে রক্ত পৌঁছে দেবেন শুরু হয় তার তোড়জোড়।রক্তের প্রয়োজনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে রক্তদাতা এবং রক্তের খোঁজে পোস্ট দেন সংগঠনের কর্মীরা। আর রক্তদাতার খোঁজ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রক্ত সংগ্রহ করে বিনামূল্যে তাঁরা রোগীর স্বজনের হাতে রক্তের ব্যাগ তুলে দেন।
শুধু রক্ত বা রক্তদাতার খোঁজই নয়, সংগঠনটি বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি, সচেতনতামূলক মানববন্ধন, সহায়তা দানসহ নানা ধরনের সেবা ও প্রচারণামূলক কাজ করছে।
ব্লাড ব্যাংকের সঙ্গে জড়িতরা জানান, জরুরি প্রয়োজনে রোগীদের জীবন বাঁচাতে রক্ত জোগাড় করে দেওয়ার মনমানসিকতা নিয়ে ২০১৬ সালের ০৯ জুন ব্লাড ব্যাংক অব নকলার যাত্রা শুরু হয়।
এরপর সপ্তাহে গড়ে ৫-৭ জনকে রক্ত সংগ্রহ করে দেন তাঁরা। এ পর্যন্ত হাজারের অধিক বিভিন্ন রোগীকে রক্ত জোগাড় করে দিয়েছে সংগঠনটি। বর্তমানে সংগঠনের ফেসবুক গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত আছেন ৩ হাজারের বেশি সদস্য। ইতিমধ্যে বিনা মূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয়ের বেশ কয়েকটি কর্মসূচি পালন করেছে সংগঠনটি।
সব প্রতিবন্ধকতা মাড়িয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াতে করোনা দুর্যোগের সময়েও উক্ত সংগঠনের তরুণেরা মানুষের সেবা করেছেন। করোনা সচেতনতায় লিফলেট, মাস্ক,সাবান বিতরণসহ মুমূর্ষু রোগীর রক্তের প্রয়োজনে কাজের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে সংগঠনটি।
সংগঠনটির সাথে জড়িতদের সাথে কথা বলে জানা যায়-দুর্ঘটনায় আহত, ক্যান্সার বা অন্য কোন জটিল রোগে আক্রান্ত, অস্ত্রোপাচার কিংবা প্রসূতি মা ও থ্যালাসেমিয়ার মতো বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় রক্ত সঞ্চালনের প্রয়োজন হয়।কিন্তু এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আমাদের রক্ত দাতা খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। তাই , একজন রোগীও যেন রক্তের অভাবে মারা না যায়। সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে সংগঠনের সাথে জড়িত সকল সদস্য।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.