মেহেদী হাসান ।।
আজ ২১ ফেব্রুয়ারি। মহান ‘শহীদ দিবস’ ও ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’। হাতে হাতে বসন্তে ফোটা ফুল নিয়ে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানানোর দিন।
রাত ১২টা ১ মিনিটে একুশের প্রথম প্রহর রাত ১২টা ১ মিনিটে জামালপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব মির্জা আজম এমপি , সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মো. মোজাফফর হোসেন,জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন সহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ও পেশাজীবি সংগঠন এর নেতাকর্মীরা।
কিন্ত অসুস্থ হয়ে হাসপাতালের বেডে শুয়ে ছিলেন ভাষা সৈনিক কয়েস উদ্দিন সরকার। গত শনিবার বিকালে বাথরুম থেকে বের হবার সময় পা পিছলে কোমরে ব্যথা পেলে ৯৫ বছর বয়সী এই ভাষা সৈনিককে ২৫০ শয্যার জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাকে চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালের কেবিনে রাখা হয়েছে।
সকালে সবাই ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানালেও, শ্রদ্ধা জানাতে পারেন নি ভাষা সৈনিক কয়েস উদ্দীন। তাই তিনি হাসপাতালে বেডে শুয়ে মোবাইলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব মির্জা আজম এমপি কে শহিদ মিনারে গিয়ে শহীদদের শ্রদ্ধা জানাবেন বলে ইচ্ছে প্রকাশ করেন।
মির্জা আজম এমপি জামালপুরের সকল কর্মযজ্ঞ শেষে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন।পথিমধ্যে ভাষা সৈনিক কয়েস উদ্দীন এর ফোন পেয়েই সাথে সাথেই জামালপুর পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন ছানু কয়েস উদ্দীন কে শহীদ মিনারে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন।
জামালপুর পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন ছানু “হ্যালো মেয়র” টিম এর সদস্যদের দিয়ে এম্বুলেন্সে করে জামালপুর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে নিয়ে আসেন।
হ্যালো মেয়র টিম এর সদস্যদের সাথে নিয়ে শহীদদের শ্রদ্ধা জানান ভাষা সৈনিক কয়েস উদ্দীন। এসময় আবেগে আপ্লুত হয়ে অশ্রুশিক্ত চোখে শহীদদের স্বরণ করেন। সেই সাথে শহীদদের স্মরণে তার নিজের লিখা একটি গানের ৪ লাইন গেয়ে শ্রদ্ধা জানান।
পরে তাকে পূণরায় এম্বুলেন্সে করে হাসপাতালের বেডে শুয়ে রেখে চলে আসেন হ্যালো মেয়র টিম এর সদস্যরা।
ভাষা সৈনিক কয়েস উদ্দীন তার ইচ্ছে পূরণ করায় মির্জা আজম এমপি,পৌর মেয়র আলহাজ্ব ছানোয়ার হোসেন ছানু ও হ্যালো মেয়র টিম এর সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ভাষা সৈনিক কয়েস উদ্দিন সরকার ভাষা আন্দোলনের উপর গান লিখে নিজেই গেয়ে বাঙালিদের উদ্বুদ্ধ করতেন। শোষণ, বঞ্চনা, অন্যায়-অবিচার ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে গান রচনা করেন। তিনি আইয়ুব খানের মার্শাল ল’-এর সময় এক বছর জেল খাটেন আইয়ুববিরোধী গান রচনার জন্য।
ভাষা সৈনিক কয়েস উদ্দিন সরকার জামালপুর শহরের বেলটিয়া গ্রামের মরহুম ছইম উদ্দিন সরকারের পুত্র।
