মোঃ রাশেদুর রহমান রাসেল / সৈয়দ মুনিরুল হক নোবেল ॥
একজন পুলিশ সুপার একটি জেলার পুলিশ প্রধান। বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে নিঃসন্দেহে একজন ক্ষমতাধর পদের মানুষ। অফিসিয়ালি আর নন অফিসিয়ালি সবটা সময় কেতাদুরস্ত পোশাকে গম্ভীর মেজাজে তার প্রতি পদে দম্ভ আর প্রতাপ প্রকাশ পায়। এটাই প্রকাশ্য বাস্তবতা। হাড় কাঁপানো গলায় তিনি সর্বমহলে একটু বিশেষ খাতির প্রাপ্তির জন্য পরিচিত। অনেকেই এ পদটিকে টাকা বানানোর মেশিন মনে করে থাকেন এর প্রমাণও বিস্তর এদেশে। সবচেয়ে বড় কথা পুলিশ আর মানবিকতা বর্তমানে বিপরীত মেরুতে অবস্থান করা দু’টি বিষয়। আভিধানিক অর্থে পুলিশকে জনগণের বন্ধু বলা হলেও বাস্তবতায় এর উদাহরণ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। এ যেন ‘কাজীর গরু কিতাবে আছে, তবে গোয়ালে নেই’ অনেকটাই এমন বললে অত্যুক্তি হবে না। আক্ষেপের সুরে অনেকেই বলে থাকেন ‘একজন হাফেজ যেমন চৌদ্দগোষ্ঠী বেহেশতে নিয়ে যেতে পারে, তেমনি একজন পুলিশ চৌদ্দগোষ্ঠীকে দোজখে নিয়ে যাওয়ার জন্যই যথেষ্ট। হতে পারে এসব অতিরঞ্জিত বা অন্তঃসারশূণ্য! তবুও কিন্তু প্রচলিত। আর এর পিছনে দায় রয়েছে পুলিশের পবিত্র পোষাকের আড়ালে অনেকেরই নোংড়া ও দাম্ভিক মানসিকতার।
আবার সবাই যদি খারাপ হতো তবে জনরোষেই ভেঙ্গে পড়তো পুলিশিং কার্যক্রম। গণমানুষের জানমাল রক্ষার মহতি দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়ে জীবনের ঝুঁকিকে তুচ্ছজ্ঞান করে যারা দেশপ্রেমে বলীয়ান তারাই পুলিশ বিভাগের প্রাণপুরুষ। তারাই বহুকষ্টে, ত্যাগ-তীতিক্ষা আর কর্তব্যনিষ্ঠায় আজও এ বিভাগের সম্মান ধরে রেখেছেন। শুধু ধরেই রাখেননি। গণমানুষের হৃদয়ে গড়ে তুলেছেন প্রাসাদোপম শ্রদ্ধার সিংহাসন। অমানবিকতার জিঞ্জিরাবদ্ধ বর্তমান সমাজব্যবস্থায় তাঁরাই মানবিক হয়ে মানুষের ভালবাসায় শ্রদ্ধাস্নাত হন। সাধারণ মানুষের মুখে মুখে ফেরে সেইসব মহামানবদের নাম। এরই এক প্রকৃষ্ট উদাহরণ জামালপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) নাছির উদ্দিন আহমেদ। মানবিক এ পুলিশ সুপার তাঁর ভালো কাজ ও নানামুখী জনবান্ধব উদ্যোগ নিয়ে ইতোমধ্যেই জামালপুর জেলার মানুষের মন জয় করে নিয়েছেন।
জানা যায়, এবছর অর্থাৎ ২০২১ সালের ১ মার্চ তিনি নবাগত পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন আর ২ মার্চ জামালপুরের পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেন তিনি। জামালপুরে যোগদানের পর থেকে এত অল্প সময়ে তিনি বিভিন্ন ক্ষেত্রে এনেছেন আমূল পরির্বতন। বলা বাহুল্য তাঁর মত এমন একজন সৎ পুলিশ সুপার জেলাবাসীর ভাগ্যগুণেই কেবল পাওয়া সম্ভব।
জামালপুরের পুলিশ সুপারের সাথে দেখা করার জন্য তাঁর অফিসের দরজা সাধারণ মানুষের জন্য থাকে সবসময় খোলা। অসহায় মানুষের কথা শোনার জন্য দিন-রাত অফিসে থেকে সময় দেন তিনি। ধৈর্য্য ধরে তিনি তাঁদের কথা শোনেন এবং সাধ্যমত সাহায্য সহযোগিতা করে থাকেন। অনেক ক্ষেত্রে তাঁর বেতনের টাকা দিয়েও মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়ান এই মহৎ মানুষটি। তাঁর নেতৃত্বে জামালপুর জেলার পুলিশ সদস্যরা করোনার শুরু থেকে করোনায় মৃত ব্যক্তির দাফন, সৎকার, ফ্রি অক্সিজেন সেবা, অসহায় মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রী প্রদান, লকডাউন নিশ্চিতসহ নানা কাজে গুরুত্বপূর্ণ ও নজীরবিহীন ভূমিকা রেখে চলেছেন। তাঁর যুগান্তকারী নানামূখী কল্যাণকর পদক্ষেপের কারণে জামালপুর জেলা পুলিশ এখন সারা দেশের জন্য একটি অনন্য উদাহরণ। এছাড়া তাঁর নেয়া আরও বিভিন্ন উদ্যোগ এখন দেশের বিভিন্ন জায়গায় মডেল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এই অল্প সময়ে তিনি রাজনৈতিক, সামাজিক ও করোনাকালীন মানবিক কর্মবীর হিসেবে জেলার বিভিন্ন মহলে ইতোমধ্যেই প্রশংসিত হয়েছেন। জেলার বাসিন্দাদের অভিমত এসময়ে তিনি জেলা পুলিশের প্রতিটি কর্মকান্ডে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করেছেন। এসব কারণে অসহায় মানুষের আস্থা ও বিশ্বাসের জায়গায় পৌঁছে গিয়েছেন তিনি। কেননা সাধারণ মানুষ তাঁর কাছে যে ভরসা পেয়েছেন তা হয়তো এর আগে তেমন করে কেউ দিতে পারেনি। জেলার বাসিন্দাদের নিরাপদ একটি রাত-দিন উপহার দিয়ে চলছেন জামালপুরের জনবান্ধব ও মানবিক পুলিশ সুপার নাছির উদ্দিন আহমেদ। আমাদের প্রত্যাশা তাঁর এই মানবিক আচরণ আর যথার্থ ভূমিকার কথা চিরদিন স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে জামালপুর জেলাবাসী মানুষের মনের গহীনে।<!- start disable copy paste –></!->