স্টাফ রিপোর্টার: আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে শেরপুরে এবার পুরুষদের সাথে পাল্লা দিয়ে ভোটের মাঠে নেমেছেন ৩ নারী চেয়ারম্যান প্রার্থী। তারা হচ্ছেন শেরপুর সদরের ভাতশালা ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান নাজমুন নাহার (৪৫), নকলা উপজেলার বানেশ্বর্দী ইউনিয়নে আঞ্জুমান আরা বেগম (৫৫) ও নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নে বন্দনা চাম্বু গং (৫০)। তারা ৩ জনই আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী।
জানা যায়, দ্বিতীয় দফায় ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় শেরপুর সদরের ভাতশালা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে তৃতীয়বারের মতো লড়ছেন মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী নাজমুন নাহার। প্রায় ১ বছর আগে ওই ইউনিয়নের তৃতীয় দফায় নির্বাচিত চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়ায় স্বীয় পদ থেকে পদত্যাগ করলে উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়ে নির্বাচিত হন নাজমুন। এবারের নির্বাচনে তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে লড়ছেন দলের বিদ্রোহী প্রার্থী বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শামীম হোসেন। কিন্তু উচ্চ শিক্ষিত নাজমুনের যেমন রয়েছে ব্যক্তিগত অবস্থান ও পারিবারিক ঐতিহ্য, তেমনি দলীয় অবস্থানের কারণে এবারও তিনি অনেকটাই সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন- এমনটাই গুঞ্জন উঠেছে।
এদিকে তৃতীয় দফায় ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে নকলা উপজেলার বানেশ্বর্দী ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত আনিসুর রহমানের স্ত্রী আঞ্জুমান আরা বেগম। তিনি জেলা পরিষদের সংরক্ষিত সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করে প্রার্থী হয়েছেন। এ ইউনিয়নে দলের দু’দফায় নির্বাচিত চেয়ারম্যান মাজহারুল আনোয়ার মহব্বতকে পরিবর্তন করে তাকে প্রার্থী করায় আপাতত দলীয় অঙ্গণে কিছুটা ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করলেও বিএনপি ঘরানার একাধিক সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে যিনিই প্রার্থী হোন না কেন, নির্বাচনের সময়-ক্ষণ যতই ঘনিয়ে আসবে, তার অবস্থান ততটাই ভারি হয়ে উঠবে বলে শোনা যাচ্ছে। এছাড়া, নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নে গত নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে একটি অংশের বিরোধিতার কারণে অল্প ভোটের ব্যবধানে হারলেও এবারও মনোনয়ন পেয়েছেন স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বন্দনা চাম্বুগং। সীমান্তবর্তী পাাহাড়ি ও আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় তার যেমন রয়েছে জনপ্রিয়তা ও অবস্থান, তেমনি দলের গতবারের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচিত বর্তমান চেয়ারম্যান মো. আজাদ মিয়া ও অপর মনোনয়ন বঞ্চিত মাওলানা মো. শাহ জামাল বিদ্রোহী প্রার্থী না হলে রেকর্ড করতেও পারেন তিনি।
ভোটের মাঠে ৩ নারী চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রসঙ্গে জেলা মহিলা পরিষদের সভানেত্রী জয়শ্রী দাস লক্ষ্মী বলেন, নারীর ক্ষমতায়নের প্রশ্নে জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের যে কোন নির্বাচনেই পুরুষদের তুলনায় নারী প্রার্থীর সংখ্যা আরও বাড়ানোর প্রয়োজন হলেও সে কাজটি খুব একটা হচ্ছে না। তবে, ছোট্ট জেলা শেরপুরে ৫২ ইউনিয়নের ৩টিতে হলেও আওয়ামী লীগের নারী প্রার্থী দেওয়ার বিষয়টি আমাদেরকে উৎসাহিত করেছে। ভবিষ্যতে সব দলগুলোর তরফ থেকেই সকল নির্বাচনেই নারী প্রার্থী বাড়ানো উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।