ঢাকা April 27, 2024, 4:01 am
  1. Arts & EntertainmentCelebrities
  2. blog
  3. অন্যান্য
  4. অপরাধ
  5. আইন – আদালত
  6. আন্তর্জাতিক
  7. আবহাওয়া
  8. উপ-সম্পাদকীয়
  9. কবিতা
  10. কৃষি
  11. কৃষি ও কৃষক
  12. কৌতুক
  13. খেলা ধূলা
  14. খেলাধুলা
  15. গণমাধ্যম
আজকের সর্বশেষ সবখবর

শিল্পী সম্মাননা প্রশ্নবিদ্য ও বিতর্কিত বলে মন্তব্য করলেন জেলা শিল্পকলা একাডেমীর প্রশিক্ষক 

Link Copied!

নিজস্ব প্রতিবেদক ।।
গত ১০ এপ্রিল শিল্প ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ জামালপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমীর আয়োজনে ২০১৯,২০২০,২০২১,২০২২,২০২৩ সালে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ২৫ গুণীজনকে সম্মাননা দিয়েছে জামালপুর শিল্পকলা একাডেমী। সম্মাননা অনুষ্ঠানে এই জেলার ২৫ জন গুণী শিল্পীকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সম্মাননা দেওয়া হয়েছে। যেখানে বীর মুক্তিযোদ্ধা থেকে শুরু করে শিল্প ও সংস্কৃতিতে অবদান রাখার কারণেই সম্মাননা পেয়েছেন। সেই সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ্ব মির্জা আজম এমপি।
সম্মাননা অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক শ্রাবস্তী রায় এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার নাছির উদ্দীন আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি আলহাজ্ব সৈয়দ আতিকুর রহমান ছানা,মির্জা সাখাওয়াতুল আলম মনি, জামালপুর পৌরসভার মেয়র ও শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন ছানু প্রমূখ। জানা যায়, সম্মাননার জন্য একটি মনোনয়ন জুরি বোর্ড বসে সিদ্ধান্ত নেন কারা পাবেন এই সম্মাননা। যেখানে জেলা প্রশাসক, জেলা কালচারাল অফিসার সহ অনেকেই থাকেন।
কিন্ত জামালপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমীর অভিনয় বিভাগের প্রশিক্ষক মারুফা আনোয়ার পারুল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সদ্য সম্মাননাপ্রাপ্ত সাংস্কৃতিক কর্মী বাহা উদ্দীন খান এর ফেইসবুক আইডিতে গিয়ে কমেন্টস করেন, “অনেকেই এই সম্মাননার আমন্ত্রণপত্র পেয়ে প্র‍ত্যাখান করেছেন। এই সম্মাননা প্রশ্নবিদ্ধ ও বিতর্কিত। “
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন মন্তব্য করায় বিতর্কের ঝড় বইছে জামালপুর সাংস্কৃতিক অঙ্গন জুড়ে। সম্মাননা প্রাপ্তরাও এই মন্তব্যে হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন। যেখানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ্ব মির্জা আজম এমপি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সেখানে এই আমন্ত্রণপত্র প্রত্যাখান করলো কে তা জানার অধির আগ্রহে অপেক্ষা করেছেন জেলার সাংস্কৃতিক কর্মীরা।  মারুফা আনোয়ার পারুল এর এমন মন্তব্যে সম্মাননা মনোনয়ন বোর্ড ও উপস্থিত অতিথিবৃন্দ সহ সকল সম্মাননা প্রাপ্তদের বিতর্ক করেছেন বলে মন্তব্য করেন সাংস্কৃতিক কর্মীরা।
এই সম্মাননা নিয়ে নাট্যকর্মী ও নির্দেশক সাগর মূখার্জী সাংবাদিকদের বলেন, জামালপুরে সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে যাদের বিশেষ ভূমিকা ছিলো তাদেরকেই এই সম্মাননা দেওয়া হয়েছে। আর মনোনয়ন বোর্ড সঠিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সম্মাননা দিয়েছেন। অভিনয়ের প্রশিক্ষক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যা মন্তব্য করেছেন তার ব্যক্তিগত মনগড়া মতামত।  থিয়েটার অঙ্গনের অধিকারী নাট্যকার শাহীন রহমান বলেন, ঢালাওভাবে অভিযোগ মন্তব্য করাটা ঠিক হয় নি। সুনির্দিষ্টভাবে যদি কোন অভিযোগ থাকে তাহলেই তিনি এমন মন্তব্য করতে পারেন। এতে সকল সম্মাননাপ্রাপ্তদের অসম্মানিত করা হয়েছেন।
একাধিক সাংস্কৃতিককর্মী অভিযোগ করে বলেন, শিল্পকলা সম্মাননা অনুষ্ঠানটি খুবই সুন্দরভাবে হয়েছেন। আমাদের সকলের গুণীজনদেরই এই সম্মাননা দেওয়া হয়েছে। শিল্পকলার প্রশিক্ষকের এমন মন্তব্য নিশ্চয়ই আগত অতিথি ও সম্মানা প্রাপ্তদের আহত করেছেন।
তারা আরও বলেন, শিল্পকলার অভিনয় প্রশিক্ষক বিভাগের নিয়োগের ক্ষেত্রেও অনিয়ম ও ত্রুটিপূর্ণ ছিলো । কিন্ত ভয়ে সাংস্কৃতিক কর্মীরা কেউ মুখ খুলেনি। একাধিক যোগ্য প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেও তারা নিয়োগ পান নি। নিয়োগ পরীক্ষার দীর্ঘদিন পর এর ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। যা নিয়ে সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সকলের মাঝেই এক ধরণের বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত অভিনয় বিভাগের বিতর্কিত এই প্রশিক্ষককে বাদ দিয়ে প্রকৃত নাট্য নির্দেশক ও নাট্যকর্মীদের থেকে প্রশিক্ষক নেওয়ার জোর দাবী জানান।
সম্মাননা প্রাপ্ত গুণীজন বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী ইমাম দুলাল বলেন, শিল্পকলার প্রশিক্ষক মারুফা আনোয়ার পারুলের এমন বন্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। প্রশিক্ষক নিজেই বিতর্কিত। জামালপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমীর কালচারাল অফিসারকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেন এই গুণীজন।
গুণী শিল্পী সম্মাননা প্রাপ্ত সাংস্কৃতিক কর্মী বাহা উদ্দীন খান বলেন, সম্মাননা পাওয়ার পর একজন সদ্য বিতর্কিত প্রশিক্ষকের মন্তব্যে আহত হয়েছি। ৩৩ বছরে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে যুক্ত থেকে নিজের জীবন যৌবন শেষ করে সম্মাননা পাওয়ায় যতটুকু প্রানভরে প্রাপ্তির নি:শ্বাস তুলেছিলাম। এমন মন্তব্যে এখন এই সম্মাননা ফিরিয়ে দিলেও শান্তি পাবো না। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
সাংস্কৃতিক কর্মী কবি রবিউল ইসলাম রাসেল বলেন, বিষয় টি আমি এখনো দেখিনি৷ তবে বিতর্ক থাকবেই। আমি আগে দেখি কি মন্তব্য করেছেন প্রশিক্ষক।
এ বিষয়ে জেলা শিল্পকলা একাডেমীর অভিনয় বিভাগের প্রশিক্ষক মারুফা আনোয়ার পারুল মুঠোফোনে কল রিসিভড করলে বক্তব্য চাইলে কথা বলতে রাজী হোন নি। পরে ফোন কেটে দিয়েছেন। জামালপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমীর কালচারাল অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন এর মুঠোফনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও কল রিসিভড করেন নি।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক শ্রাবস্তী রায় বলেন, আমি এখনও অভিনয় বিভাগের প্রশিক্ষককে চিনি না। উনার সম্পর্কে জানিও না। আমি বিষয় টি অবগত হলাম। তবে প্রকৃত সম্মাননা প্রাপ্তরাই সম্মাননা পেয়েছেন। বিষয়টি বিতর্কিত করার কোন কারণ নেই।